,

আর কখনো ঝলমলিয়ে উঠবেনা আবিদার হাসিমুখ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দূর্ঘটনায় বানিয়াচংয়ের ২ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৬ জন। নিহতদের মধ্যে আবিদা আক্তার সোহা নামে দুই বছরের এক শিশুও রয়েছে। এ দূর্ঘটনায় আদিবার বাবা-মা-ভাই ও দাদি আহত হয়েছেন। দূর্ঘটনায় নিহতরা হলেন বানিয়াচং ১নং উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের টাম্বুলিটুলা মহল্লার সোহেল মিয়ার মেয়ে আদিবা আক্তার সোহা ( ২) ও ৭নং বড়ইউড়ি ইউনিয়নের মর্দনমুরত গ্রামের আইয়ুব হোসেনের পুত্র আল আমিন মিয়া (৩৪)। আহতরা হলেন, নিহত আদিবার বাবা সোহেল মিয়া (২৮), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (২৫), আদিবার ভাই নাফিস আহমেদ (৬), সোহেল মিয়ার শ্বাশুড়ি রেনু বেগম (৪৫, মর্দনমুরত গ্রামের মনু মিয়া (৪০) ও একই গ্রামের শামিম মিয়া ( ২২)। আহত সোহেল মিয়ার পারিবারিক সুত্রে জানায়, সোহেল কিছুদিন পূর্বে চট্রগ্রামের কলসি দিঘীর পাড়ের একটি গার্মেন্টসে কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর হিসেবে যোগদান করেন। সম্প্রতি কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন সোহেল। ছুটি শেষ করে তার কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য সোমবার শায়েস্থাগঞ্জ রেল জংশন থেকে পরিবার নিয়ে ট্রেনে উঠেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় থানার মন্দবাগ এলাকায় চট্রগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী তুর্ণা নিশীথার সঙ্গে সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আদিবা আক্তার সোহা ও আল আমিন মিয়া নিহত হন। আহত হন ৬ জন। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের সদস্যরা নিহতদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তাদের পরিচয় সনাক্ত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় আদিবা আক্তার সোহা ও আল আমিন মিয়াকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আল আমিনের চাচাতো ভাই ফুল মিয়া জানান, আল আমিন নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে চট্রগ্রাম যাচ্ছিলেন। আহত মনু মিয়া ও শামিম মিয়া নিহত ফুল মিয়ার সাথে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। আহত সোহেল, নাজমা, রেনু বেগম, মনু মিয়া, শামিম ও নাফিসকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে এদের মধ্যে মুমূর্ষু অবস্থায় সোহেল ও নাজমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহত রেনু বেগমের চিকিৎসা চলছে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে। নিহত আদিবা আক্তার সোহা ও আল আমিনের লাশ আনতে তাদের পরিবাবারে লোকজন কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌছেছেন। বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার হতাহতের সত্যতা নিশ্চিতকরে জানান, নিহত পরিবারের প্রত্যেককে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন তাৎনিকভাবে ২৫ হাজার টাকা প্রদান করেছেন বলে সেখানকার ইউএনও আমাকে নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নিহতদের পরিবারকে সাহায্য-সহযোগীতা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার। প্রসঙ্গত, গত সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্ত:নগর উদয়ন ও তূর্ণা নিশীথার মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১৭ জন নিহত ও আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী।


     এই বিভাগের আরো খবর